হে আমার মেয়ে।।
আমি চল্লিশের জগৎ পার হয়ে পঞ্চাশের পথে পা রেখেছি। যৌবনকে বিদায় দিতে যাচ্ছি, সেও আমার কাছ থেকে বিদায় নিতে চায়। নতুন কোন স্বপ্ন এবং উচ্চ আকাঙ্খা আর নেই।
আমি অনেক দেশ ও শহর ভ্রমণ করেছি, বহু জাতির সাহচর্য লাভ করেছি এবং জীবন ও জগৎ সম্পর্কে অনেক ধারণা অর্জন করেছি।
আজ আমার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শুন! কথাগুলো সঠিক ও সুস্পষ্ট। এগুলো আমার বয়স ও অভিজ্ঞতার আলোকেই তোমাকে বলছি। আমি ছাড়া আর কেউ তোমাকে এগুলো বলবে না।
আমি অনেক লিখেছি, মিম্বারে ও সমাবেশে দাঁড়িয়ে অনেক ভাষণ দিয়েছি, অনেক নসীহত পেশ করেছি। উত্তম চরিত্র অর্জনের আহ্বান জানিয়েছি, অশ্লীলতা বর্জন ও সকল প্রকার অন্যায় কাজ বর্জনের ডাক দিয়েছি। নারীদেরকে ঘরে ফিরতে ও কুরআনের সুপ্রসিদ্ধ বিধান পর্দার আবরণে আবৃত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি, তাদের সৌন্দর্য্যের স্থানগুলো ঢেকে রাখতে বলেছি। লিখতে লিখতে কলম এখন দুর্বল হতে চলছে, কথা বলার সময় মুখে তা আটকে যাচ্ছে। এত কিছু করার পরও আমি মনে করি না যে, আমরা কোন অশ্লীল কাজ সমাজ থেকে দূর করতে পেরেছি। বেহায়াপনা দিন দিন বেড়েই চলছে, পাপাচারিতা দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে এবং অশ্লীলতা দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ছে। আমার মনে হয় কোন ইসলামী দেশই এর আক্রমণ থেকে মুক্ত নয়। মিশর, সিরিয়া তথা সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের সীমা পার হয়ে পাকিস্থান, বাংলাদেশসহ সমগ্র এশিয়ায় এর আক্রমণ বেড়েই চলছে। মহিলারা বের হচ্ছে পর্দাহীন হয়ে, সৌন্দর্যের স্থানগুলো প্রকাশ করে, মুখমণ্ডল, বক্ষদেশ এবং কেশ উন্মুক্ত করে।
আমার ধারণা, নসীহত করে আমরা সফল হইনি। হে আমার কন্যা! তুমি কি জান কেন আমরা সফল হইনি? সম্ভবতঃ আমরা এখনও গ্রহণযোগ্য পন্থায় নসীহত করতে পারিনি এবং সংশোধনের দরজায় পৌছতে পারিনি।